হবিগঞ্জে ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে টানা তিন দফায় প্রায় ২০ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন ছিল পুরো জেলা। শুক্রবার (১ আগস্ট) সকাল ১০টা থেকে সীমিত আকারে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হলেও এখনো পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। এলাকাভেদে ১ থেকে ২ ঘণ্টা পরপর সাময়িকভাবে বিদ্যুৎ দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
বিপর্যয়ের সূত্রপাত ঘটে বৃহস্পতিবার দুপুরে। কয়েক দফায় বিদ্যুৎ এলেও সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পর থেকে পুরো জেলাই অন্ধকারে ডুবে যায়। কারণ, শাহজীবাজার পাওয়ার গ্রিডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে তিনটি ট্রান্সফরমার পুড়ে যায়। এর ফলে বাহুবল ছাড়া জেলার বাকি আটটি উপজেলা পুরোপুরি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, শুরুতে সার্কিট ব্রেকার ও ফিউজে সমস্যা দেখা দিলেও সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ করে ট্রান্সফরমারে আগুন ধরে যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে শায়েস্তাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চেষ্টা চালায়।
এই দুর্ঘটনায় সবচেয়ে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। বিদ্যুৎ না থাকায় পানির তীব্র সংকট দেখা দেয় বিভিন্ন এলাকায়। শহরের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়, সন্ধ্যার পর থেকেই শহরে নামে অন্ধকার আর নীরবতা।
শাহজীবাজার পাওয়ার গ্রিডের সহকারী প্রকৌশলী তাফসির বিন বাশার জানান, পুড়ে যাওয়া ট্রান্সফরমারগুলোর মধ্যে একটির অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। এরই মধ্যে একটি মেরামত করে সীমিত বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হয়েছে, আরও একটি আজ সন্ধ্যার মধ্যে ঠিক করার চেষ্টা চলছে। তবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ট্রান্সফরমারটি মেরামতে আরও সময় লাগবে। নতুন ট্রান্সফরমার আনাও সহজ নয়, কারণ এটি ব্যয়বহুল ও টেন্ডার প্রক্রিয়ার আওতায় পড়ে।
হবিগঞ্জ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুর মোর্শেদ বলেন, বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে কিছুটা সময় লাগবে। তবে মানুষের দুর্ভোগ কমাতে এলাকাভেদে সাময়িকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে পুরো জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করার জন্য আমাদের টিম নিরবিচারে কাজ করছে।